October 28, 2025

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাইবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি’২৫-২৭ এর আংশিক প্যানেল-২ প্রকাশ।
তারিখ- ০২ অক্টোবর ২০২৫

বিস্তারিত:
সাংগঠনিক গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৪, ২০ এবং ২৪(উপ-ক ও গ) অনুযায়ী শীর্ষ নেতৃবৃন্দের স্ব-পদ কার্যবিবরণী ও ক্ষমতা অনুসরণ করতঃ কেন্দ্রীয় সমন্বয় বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাইবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ২০২৫-২৭ খ্রিঃ এর জন্য নিম্ন তালিকাভূক্ত ব্যক্তিবর্গকে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্য হিসেবে অনুচ্ছেদ ২৪(উপ-ক ও গ) এ বর্ণিত শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে উল্লেখিত স্ব স্ব পদে ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে চূড়ান্তভাবে মনোনিত হলো-

১। জনাব মিতায়ন চাকমা (সহ সভাপতি)
২। জনাব এডভোকেট এম আল আমিন (সহ সভাপতি)
৩। জনাব তৌহিদুস সালাম নিশাদ (সহ সভাপতি)
৪। জনাব মোছাঃ মুক্তা হাসান (সহ সভাপতি)
৫। জনাব ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান (সহ সভাপতি)

৬। জনাব ইঞ্জিনিয়ার মোঃ অলিউল্লাহ ভূইয়া সায়েম (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
৭। জনাব শাহরিয়ার রশিদ শোভন (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
৮। জনাব এইচ কে শাফি (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
৯। জনাব আসাদ খোকন (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১০। জনাব হাওয়া আক্তার তোহা (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১১। জনাব জি এম সালাউদ্দিন কাদের আসাদ (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১২। জনাব আলী আকবর রাজন (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৩। জনাব তানভীর আহমেদ মাতবর (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৪। জনাব মোঃ তন্ময় হাসান লিমন (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৫। জনাব ইমরানুল হাসান আরাফাত (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৬। জনাব এস এম হেলাল (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৭। জনাব এম এম জসিম (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৮। জনাব ইয়াসির আরাফাত জীবন (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
১৯। জনাব মোঃ মিজানুর রহমান জিকো (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
২০। জনাব এস এম মহিউদ্দিন মাসুদ (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
২১। জনাব মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
২২। জনাব মনিরুজ্জামান মামুন (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)

২৩। জনাব এম আল হামিদ (সহ সাধারণ সম্পাদক)
২৪। জনাব আব্দুল আজিজ আকাশ (সহ সাধারণ সম্পাদক)
২৫। জনাব আজমীর হোসেন নীল (সহ সাধারণ সম্পাদক)
২৬। জনাব সাইদুর রহমান (সহ সাধারণ সম্পাদক)
২৭। জনাব জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী (সহ সাধারণ সম্পাদক)
২৮। জনাব শিকদার শাহীন (সহ সাধারণ সম্পাদক)
২৯। জনাব মমিন উল্লাহ অপু (সহ সাধারণ সম্পাদক)
৩০। জনাব এডভোকেট মোবারক হোসেন (সহ সাধারণ সম্পাদক)
৩১। জনাব ইমরুল ইসলাম আলাল (সহ সাংগঠনিক সম্পাদক)

৩২। জনাব মোহাম্মদ মাসুদ মিয়া (সাংগঠনিক সম্পাদক, বরিশাল বিভাগ)
৩৩। জনাব জিয়া উদ্দিন জিয়া (সাংগঠনিক সম্পাদক, খুলনা বিভাগ)
৩৪। জনাব মোঃ মাহামুদুল হাসান শাকিল (সহ দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক)
৩৫। জনাব আকাশ মাহমুদ (সহ প্রচার সম্পাদক)

৩৬। জনাব ডাঃ জাকিয়া সুলতানা মিতালী (স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক)
৩৭। জনাব এডভোকেট গাজি সাইদুর রহমান (আইন বিষয়ক সম্পাদক)
৩৮। জনাব আকরাম হোসেন দুলাল (শ্রম বিষয়ক সম্পাদক)
৩৯। জনাব নিয়াজ মোর্শেদ (সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক)
৪০। জনাব কহিনুর খানম মানবী (নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক)
৪১। জনাব রাহা মাহমুদা পলি (সহ-নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক)
৪২। জনাব সাইফুল ইসলাম (সহ-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক)
৪৩। জনাব এম তারিকুল ইসলাম (সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক)
৪৪। জনাব ইয়াকুব সোহেল (প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক)
৪৫। জনাব নিজাম উদ্দিন নাজিম (সহ-প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক)
৪৬। জনাব মির্জা মুহাম্মদ সোয়াইব সুজন (সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক)
৪৭। জনাব জনাব ইউনূস মোল্লা (পল্লী ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক)
৪৮। জনাব নাসির উদ্দিন নাসির (ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক)
৪৯। জনাব হাফেজ তাইফুর রহমান কাওসার (সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক)
৫০। জনাব শাহীন সরকার (ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক)
৫১। জনাব মুহাম্মদ কাওসার (সহ ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক)

কার্যকরী সদস্যঃ
৫২। জনাব মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ হাসান (কার্যকরী সদস্য)
৫৩। জনাব মোঃ রুহুল আমিন (কার্যকরী সদস্য)
৫৪। জনাব মঈনুদ্দিন রাজু (কার্যকরী সদস্য)
৫৫। জনাব মোঃ হাবিবুর রহমান বৃত্ত (কার্যকরী সদস্য)
৫৬। জনাব মোঃ সাব্বির হোসেন (কার্যকরী সদস্য)
৫৭। জনাব মোঃ ফারুক হোসেন (কার্যকরী সদস্য)
৫৮। জনাব আবদুল ওহাব (মামুন কবি) (কার্যকরী সদস্য)
৫৯। জনাব মোঃ আরাফ রিফাত (কার্যকরী সদস্য)
৬০। জনাব মোঃ সাদ্দাম হোসেন (কার্যকরী সদস্য)
৬১। জনাব মোঃ জামিরুল ইসলাম জামিল (কার্যকরী সদস্য)

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন-

“ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য অত্যন্ত ঘটনাবহুল ও স্মরণীয় একটি দিন ১০ মহররম। বিশ্বের ইতিহাসে এই দিনটিতে অসংখ্য ঘটনা সংঘটিত হয়। তাই এই দিনটির মহিমা অসীম। এক বিয়োগান্তক বিষাদময় ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত এদিন-যা পবিত্র আশুরা হিসেবে পালন করা হয়। অন্যায় অবিচার জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মহানবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রাঃ) এ দিনে কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। এই দিন শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন। জাগতিক অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ইমাম হোসেন (রা:) এঁর আত্মত্যাগ বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মুসলমান ও বিশ্ববাসীর জন্য এক মহিমামন্ডিত অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। ইমাম হোসেনের কষ্ট ও শাহাদাত এবং ইসলাম বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি যে আত্মত্যাগ করেছিলেন তা দুনিয়াতে এক বিশাল প্রেরণার উৎসস্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে সৃষ্টিকর্তা কেন্দ্রিক ন্যায়বিচার, তাকওয়া, ত্যাগ ও মানবিক মর্যাদার মর্মবাণী প্রকাশিত হয়।

হয়রত হোসেন (রা:) এঁর শাহাদাত অন্যায়, অত্যাচার ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে এক নজীরবিহীন আদর্শিক সংগ্রামের উদাহরণ। ক্ষমতার প্রতি নিবিড় নিবিষ্ট মোহে আচ্ছন্ন থেকে যারা ইনসাফ ও মানবতাকে ভুলুন্ঠিত করেছিল তাদের বিরুদ্ধেই ইমাম বাহিনী যুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিল। কারবালায় ইমাম বাহিনীর শাহাদাত বরণ সর্বকালে দেশে দেশে অত্যাচারির কবল থেকে মুক্ত হতে নিপীড়িত মজলুম মানুষকে উদ্দীপ্ত করে আসছে।

গত ১৬ বছরে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার সকল ভাঁওতাবাজীর নির্বাচন, মানুষের ভোটাধিকার হরণ, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, সন্ত্রাস, হানাহানি ও দেশের টাকা বিদেশে পাচারসহ এক অবর্ণনীয় শোষণ ও জুলুুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী রায়ে সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ রাখা এবং তাঁকে সুচিকিৎসা বঞ্চিত করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছিল। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নিষ্ঠুর আওয়ামী নেতাদের পৈশাচিক দমন-পীড়ণ ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য। আজও ইমাম হোসেন (রা:) ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের আত্মদানের চেতনায় দেশে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। আর কোনভাবেই যাতে নির্দয় অত্যাচারির অভ্যুদয় না ঘটে সেজন্য ইমাম বাহিনীর যুদ্ধ আমাদেরকে সবসময় প্রতিরোধের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করবে।

আমি শহীদ হযরত ইমাম হোসেন (রাঃ), তাঁর শহীদ পরিবার ও সঙ্গীদের শাহাদাতের স্মরণে তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই, তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।

আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অনেকেই অনেক নেতিবাচক কথা বলছেন। আমরা কিন্তু খুব ইতিবাচক দেখতে পাচ্ছি সামনে। বাংলাদেশের মানুষ তর্ক করছে, বিতর্ক করছে, আলোচনা করছে এবং তার মধ্য দিয়ে তারা একটা জায়গায় এসে পৌঁছাচ্ছে এবং আমি বিশ্বাস করি, আমরা এই আলোচনার মধ্য দিয়েই, তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়েই সেই জায়গায় পৌঁছাব।

রোববার বিকেলে রাজধানী গুলশানের রেনেসাঁস হোটেলে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, (এফএসডিএস) আয়োজিত ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটা ব্যাপারে আমরা সবাই একমত, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। এ ব্যাপারে আমরা একমত।

তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে কিছুটা বিভেদ-বিভাজন নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তাদের মত-পথ নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য থাকতেই পারে, যেটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের মানুষ সবসময় প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ থেকেছে, প্রতিটি ক্রান্তিকালে, প্রতিটি সঙ্কটে, বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা দেশের নিরাপত্তা রক্ষা করেছে, দেশকে রক্ষা করেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিতুমীরের সময় থেকে শুরু করে ২৪ পর্যন্ত প্রতিটি সময় বাংলাদেশের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের প্রত্যেকটি জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। ভাষা আন্দোলন বলেন, ৬৯ -এর গণঅভুত্থান বলেন, ৭০ -এর নির্বাচন বলেন, ৭১ মুক্তিযুদ্ধ বলেন, সর্বক্ষেত্রে মানুষ এক হয়ে লড়াই করেছে তাদের নিজের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য।

তিনি বলেন, জনগণকে ক্ষমতায়িত করতে হবে, জনগণের সার্বভৌমত্বকে নিশ্চিত করতে হবে। যদি আমরা সেটা করতে পারি তাহলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আমাদের অন্যান্য বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজ হয়ে আসবে। আমরা এখনো গণতন্ত্র চর্চা করতে পারিনি ঠিকমতো। আমরা গণতন্ত্রকে চর্চা করতে গিয়ে প্রতি পদে পদে বাধা পেয়েছি।

তিনি বলেন, অনেকেই অনেকে নেতিবাচক কথা বলছেন। আমরা কিন্তু খুব ইতিবাচক দেখতে পাচ্ছি সামনে। বাংলাদেশের মানুষ তর্ক করছে, বিতর্ক করছে, আলোচনা করছে এবং তার মধ্য দিয়ে তারা একটা জায়গায় এসে পৌঁছাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এই আলোচনার মধ্য দিয়েই, তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়েই সেই জায়গাটা পৌঁছাব। যেখান থেকে আমরা সত্যিকার অর্থেই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্মাণ করবার জন্য একটা সঠিক পথ খুঁজে বের করতে পারব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশনগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি বলেন, ১৬ সালে আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেছি। ২৩ সালে ৩১ দফার কথা বলেছি। যেখানে আমরা পুরো রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেছি। কোথায় প্রবলেমগুলো হচ্ছে? আমি বুঝতে পারি না। আমাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে এই জায়গাটাতে এক হওয়া দরকার। গণতন্ত্র বিশ্বাস করি, আমাদের তো বিভিন্ন মত থাকবেই। সে মতগুলোকে আমরা এক জায়গায় নিয়ে এসে গণতন্ত্রে ফিরে যাব, জনগণের ক্ষমতায়ন করব, জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দেব। জনগণ ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে তার সেই মতকে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)–এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নামে এক ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নাম উল্লেখ করে একটি সতর্কীকরণ নোটিশ প্রকাশ করা হয়, যা দলটির পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘অনেক আগে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ভুয়া সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রেস রিলিজ দিয়েছিলাম, এটি সেটি তবে নতুন করে তারিখ ও আমার স্বাক্ষর এডিট করে সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে দিয়েছে, যেটি ভুয়া।’

তথ্য মোতাবেক দেখা যায়, ২০২৪ সালের ২৪ অক্টোবরের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ কোনো সংগঠন করলে এর সাথে দলের কোনো সম্পর্ক থাকবে না, দলের কোনো নেতাকর্মী যদি ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে যায়, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনিব্যবস্থাও নেয়া হবে।’

তিনি উল্লেখ করেন, দলের স্বীকৃত অঙ্গসংগঠনের বাইরে শিক্ষকদের সংগঠন, ডাক্তারদের সংগঠন ড্যাব, ইঞ্জিনিয়ার ও কৃষিবিদদের সংগঠন অ্যাব, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আছে। এর বাইরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয়তাবাদী নামের কোনো সংগঠন করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

৫ জুলাই দেয়া ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, বিএনপি ও দলের অনুমোদিত ১১টি সংগঠন ব্যতীত অন্য কোনো সংগঠন অনুমোদিত নয় এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, জিয়া পরিবার ও তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে সংগঠন গঠনের অভিযোগও উত্থাপন করা হয়। এতে আরো বলা হয়, অনুমোদনহীন এসব সংগঠন বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে এবং এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়।

বিএনপির ১১টি অনুমোদিত অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন হলো

১. জাতীয়তাবাদী যুবদল

২. জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

৩. জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল

৪. জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল

৫. জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল

৬. জাতীয়তাবাদী কৃষক দল

৭. জাতীয়তাবাদী মহিলা দল

৮. জাতীয়তাবাদী ওলামা দল

৯. জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল

১০. জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল

১১. জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)

বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ওপরের তালিকা ব্যতীত অন্য সব সংগঠন অননুমোদিত ও অবৈধ। একইসাথে, এসব সংগঠনের নামে কোনো পদ বা পরিচয় ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি প্রচার চালালে দল তা স্বীকার করবে না।

তবে দলটির কেন্দ্রীয় দফতর এ বিজ্ঞপ্তিকে ভুয়া আখ্যা দিয়েছে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, ‘এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সঠিক নয়। এটি বিএনপির অনুমোদিত দফতর বা প্রচলিত কোনো মাধ্যমে প্রচারিত হয়নি। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে।’

সাধারণত, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কোনো সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কিংবা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তিটি সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যে দলের নেতাকর্মীরা বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করেছেন এবং কয়েকটি গণমাধ্যমে সেটি প্রকাশও পেয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দলের পক্ষ থেকে সকলকে বিভ্রান্ত না হতে এবং যাচাই-বাছাই করে তথ্য প্রচারের আহ্বান জানানো হয়েছে।

আজ ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে সফররত প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড: মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে তাঁদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জনাব তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন করা প্রয়োজন হবে।

জনাব তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এই অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টাও জনাব তারেক রহমানকে ফলপ্রসু আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে আজকের বৈঠকে ২৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৬টি দল বক্তব্য দিয়েছে। যার মধ্যে ২৩টি দল ডিসেম্বরে, ১টি দল জানুয়ারী /ফেব্রুয়ারি এবং ১টি দল শুধু জুনে নির্বাচনের কথা বলেছে।

১৯৭৮-​এর ৩০ নভেম্বর সরকার ১৯৭৯ সালের ২৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবিতে দু’দফায় পিছিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে এই প্রথম সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি ২০৭টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে এবং ৩৯ টি আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দল হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম বলেন, বিএনপির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনা।’ মালয়েশিয়ার ‘বিজনেস টাইমস’ লেখে, ‘অতীতে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে পরিচিত করেছিল যে মহাপ্লাবনী সমস্যাগুলো রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম কার্যত সেগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।’ এসময় নিউইয়র্ক টাইমসের বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং স্বনির্ভরতা অর্জন এবং উৎপাদন দ্বিগুণ করার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়।‘৮০ সালেই দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থানান্তরিত করা হয় নয়াপল্টনে। ‘১৯৮১-​র ২৯ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সফরে গেলে ৩০ মে ভোরে সার্কিট হাউজে কিছু বিপদগামী সেনাসদস্য তাকে হত্যা করে। তবে নানা পদক্ষেপে ও কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম ও বাংলাদেশের ইতিহাস হয়ে উঠেছে অভিন্ন। ব্যক্তিগত সততা, উন্নয়ন, ঐক্য এবং সুসম্পর্কের রাজনৈতিক দর্শণের কারণে রাজনীতির ইতিহাসে তার নাম লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।

মূলদল বিএনপি সম্পর্কিতঃ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির দলীয় পটভূমি ও ইতিহাসঃ

‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’ এই আদর্শিক দৃষ্টিভঙির প্রতীক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম প্রবর্তিত একমাত্র রাষ্ট্রীয় দর্শণ‍ ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ বহুদলীয় গণতন্ত্র, উন্নত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সুখি ও সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ বির্নিমাণ ও  ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে ৭১’এর সম্মূখ যুদ্ধের একমাত্র মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের সূর্যসন্তান , মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’।বাংলাতে এই দলটি ইংরেজি সংক্ষিপ্ত নামানুসারে ‘বিএনপি’ এবং এই নামেই সর্বাধিক পরিচিত। স্বাধীনতা যুদ্ধপূর্ব ২৫ বছর ধরে এই অঞ্চলের নাগরিকরা গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন। নিয়মিতান্ত্রিক এ লড়াইয়ের বিজয় ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পথে অর্জনের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পাক সমরজান্তার হঠকারিতা আমাদেরকে ঠেলে দিয়েছিল যুদ্ধের পথে। ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী ভারতের সহয়তা স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সাংস্কৃতির প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আধিপত্যের প্রভাব পড়ে। তৎকালীন আওয়ামী সরকার ভারতীয় আধিপত্যের প্রভাব থেকে জনগণের অধিকার ও বাংলাদেশের স্বার্থকে রক্ষা করতে পারেনি।

সার্বিক বাস্তবতায় স্বনির্ভর বাংলাদেশের রাজনীতিতে জিয়াউর রহমানের আগমন অনিবার্য প্রত্যাশা ছিল। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে তিনি বাংলাভাষী পাকিস্তানি সৈনিক হিসেবে প্রবল বিক্রম লড়েছিলেন খেমকারান রণাঙ্গনে। স্বদেশ ও শত্রুপক্ষের কাছে তার সেদিনের অবিস্মরণীয় যুদ্ধ বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল। আবার ১৯৭১-​এ তিনি এক ঘোর দুঃসময়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল। প্রয়োজনের মুহূর্তে কি করতে হবে; জীবনবাজী রেখে সে সিদ্ধান্ত দ্রুত নেয়ার এক সহজাত ক্ষমতা তাঁকে নেতৃত্বের আসনের দিকে সব সময় ঠেলে দিয়েছে। তাই ১৯৭৫-​এর নভেম্বরের উন্মাতাল রাজপথে অভিষেক ঘটে তাঁর রাষ্ট্রক্ষমতার।

জিয়াউর রহমান মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও সম্মূখ সমরের মহানায়ক ছিলেন। সুশৃঙ্খল আইন অনুগত সৈনিক জিয়াউর রহমান সিপাহী-জনতার বিপ্লবের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু পরিনত হয়েছিলেন। আচমকা তার কাধে অর্পিত হয় এক বিশৃঙ্খল দেশের শাসনভার। তখন সামরিক বাহিনীতে শৃঙ্খল ছিল না। উস্কানি ও চক্রান্তে জর্জরিত সশস্ত্র বাহিনীকে তিনি কঠোর পদক্ষেপে সুশৃঙ্খল করলেন। দেশে রাজনীতি ছিল না, জিয়া রাজনৈতিক দলের পুনরুজ্জীবন ঘটালেন। রাজনীতিকদের জারি করা সামরিক শাসন তুলে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কালজয়ী দর্শন উদ্ভাবন করে তিনি জাতিকে উপহার দিলেন পরিচয় ও আদর্শের পতাকা। সময়ের দাবি মেটাতে তিনি সৃষ্টি করলেন নতুন রাজনৈতিক দল বিএনপি।

ঢাকার রমনা বটমূলের খোলা চত্ত্বরে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল (বিএনপি)’ নামে এই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম। বাংলাদেশের রাজনীতিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধমে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে যে শূন্যতার সৃষ্টি করা হয় তা পুরনে ইতিহাসের দাবী, দেশবাসীর আকাংখায় বিএনপির অভ্যুদয় ঘটে। বিএনপির ঘোষণাপত্রে বলা হয় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ইস্পাত কঠিন গণঐক্য, ব্যাপক জনভিত্তিক গণতন্ত্র ও রাজনীতি প্রতিষ্ঠা, এক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত জনগণের অক্লান্ত প্রয়াসের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক মুক্তি, আত্মনির্ভরশীলতা ও প্রগতি অর্জন এবং সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ অধিপত্যবাদের বিভীষিকা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বিএনপি গঠিত হয়েছে। ১১ সদস্যের স্থায়ী কমিটি, পার্লামেন্টারি বোর্ড ও দলীয় ইলেক্টোরাল কলেজ নির্ধারণ করা হয়। জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে ৫ জন সহ-সভাপতি, ১ জন সাধারণ সম্পাদক, ১ জন কোষাধ্যক্ষ, ৪ জন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১ জন করে প্রচার, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, দপ্তর, যুব, মহিলা, ছাত্র, শ্রম ও কৃষি আন্তর্জাতিক বিষয়ক ও বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক পদ রাখা হয়। দলের প্রথম কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে অবস্থিত।

মহান মে দিবস উপলক্ষে 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন

“আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস”, যা সচরাচর “মে দিবস” নামে অভিহিত, প্রতি বছর ১লা মে তারিখে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয়। আমি এই দিবসে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধি ও নিরাপদ জীবন কামনা করি।

বিশ্ব ইতিহাসে মে দিবস একটি অবিস্মরণীয় ঐতিহাসিক দিন। আজ যে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষ ৮ ঘণ্টা শ্রম সময় ভোগ করছে, তার জন্য ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে মজলুম শ্রমিকরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে ৮ ঘণ্টা শ্রম ও ন্যায্য মজুরির অধিকার আদায় সম্ভব হয়। জীবন দিয়ে রচিত হয় এক ঐতিহাসিক লড়াই-সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়—মে দিবস।

তাই এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হেমার্কেটে শ্রমিকদের তাজা রক্ত ও জীবন দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও শোষণমুক্তির সংগ্রাম এক নতুন প্রেরণা লাভ করে। তাই সারা দুনিয়ার শ্রমজীবী মানুষ মে দিবস পালনের মাধ্যমে ‘মে শহীদদের’ স্মৃতিকে চিরঞ্জীব করে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণসহ শ্রমিক-কর্মজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। আগামীতেও বিএনপি নির্বাচিত হলে একইভাবে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে আরও সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

শ্রমজীবী মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। শ্রমিকের ঐতিহাসিক অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ একটি গতিশীল, চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা জরুরি। নিশ্চিত করতে হবে ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে সেই সুযোগটি সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ এখন সেই প্রকৃত গণতন্ত্রের বাস্তবায়ন দেখতে চায়।

বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পতনের আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের রক্তস্নাত অবদান অবিস্মরণীয়। এই আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক জীবন দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ৭১ জন নেতাকর্মী ও ৩০ জন রিকশা শ্রমিক ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে সবসময় আপোষহীন সংগ্রাম করে গেছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় এই দলটি প্রতিশ্রুতি পালনে কখনোই পিছপা হয়নি।

আজকের এই মহান দিনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল ও উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাই।

আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।

মহান মে দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন :-

বাণী

“আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা মহান ‘মে দিবস’ হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত, আজকের এই দিনে আমি দেশে-বিদেশে কর্মরত সকল শ্রমজীবী মানুষ, যারা নিজের জীবন বাজি রেখে জীবিকার জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের সর্বোপরি দেশের উন্নয়নের জন্য কর্মে নিয়োজিত আছেন তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সংগ্রামী সালাম। ১৮৮৬ সালের মে মাসে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসসহ শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে অ্যামেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং এই আন্দোলনের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠে আত্মদানকারী প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।

এই দিবস আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যাপন দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে। সাবেক  রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ছিলেন একজন যথার্থ শ্রমিক। তিনি নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি বলতেন। এদেশের শ্রমিকের কল্যাণে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

এদেশে শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বেতন ও মুজুরী কমিশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের নুন্যতম মজুরী নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও তাদের বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সন্তানদের চিকিৎসা ও তাদের লেখা পড়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছে পোশাক শিল্পে। এই শিল্পে শহীদ জিয়ার রহমানের অবদান অবিস্মরণীয়। পোশাক শ্রমিকদের কল্যানে দেশ আজ ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আগামীতেও বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কল্যান ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করছি।

দুঃশাসনের প্রকোপে শ্রমিক শ্রেনী ছিল সবচেয়ে নিপীড়িত। গতবছর গণঅভ্যূত্থানে ছাত্রদের সাথে শ্রমিকদের আত্মদানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসীবাদের পতন হয়। এখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের জন্য কোন প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা না। তথাপিও শ্রমিকরা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। দেশে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করছে।

শুধু বাংলাদেশেই নয়, দুনিয়াজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণ মুক্তির সংগ্রাম বেগবান করার লক্ষ্যে মহান মে দিবসে শপথ নিতে হবে।

আমি মহান মে দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সফলতা এবং তাদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।

আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”